রোবটিক্স কাকে বলে– তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে খুবই কমন একটি শব্দ রোবট বা রোবটিক্স। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র ডিজাইন ও উৎপাদন সংক্রান্ত বিজ্ঞানকে রোবটিক্স বলা হয়। অনেকেই রোবটিক্স কি এবং এর ব্যবহার বিধি সম্পর্কে জানতে চান। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা রোবোটিক্স কাকে বলে, রোবটিক্স এর ধারণা, বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োগের ক্ষেত্র সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

রোবটিক্স কাকে বলে
রোবটিক্স কাকে বলে

আরও দেখুনঃ সাধারন জ্ঞান

রোবটিক্স কি | রোবটিক্স কাকে বলে

টেকনোলজির যে শেখায় রোবটের নকশা, গঠন ও কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হয় সেই শাখা কে রোবটিকস বলে। এক কথায় রোবটিক্স হচ্ছে প্রযুক্তির একটি শাখা। এই শাখায় রোবট সমূহের নির্মাণ, ডিজাইন কার্যক্রম ও প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয় পাশাপাশি এটি রোবট সমূহের নিয়ন্ত্রণ, সেন্সরি ফিডব্যাক এবং তথ্য সমূহের ভান্ডার। 

রোবটিক্স শব্দের উৎপত্তি ও অর্থ কি?

রোবটিক্স শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে “রোবট” শব্দ থেকে, যা পরবর্তীতে চেক লেখক ও নাট্যকার কারেল কাপেক এর একটি নাটক হতে প্রচারিত হয়। এটি মূলত ১৯২০ সালের সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়। রোবট শব্দের উৎপত্তি ঘটে গ্রিক শব্দ থেকে, যার অর্থ শ্রমিক। আজকের সময়ে এটি দ্রুত বর্ধনশীল একটি ক্ষেত্র। New Collegiate ডিকশনারীর মতে “রোবট হচ্ছে একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা যা মানুষ যেভাবে কাজ করতে পারে সেভাবে কাজ করে অথবা এর কাজ দেখে মনে হয় এর বুদ্ধিমত্তা আছে।

রোবটিক্স এর জনক কে?

রোবটিক্স এর জনক হলেন জর্জ ডেবল। যিনি সর্বপ্রথম ডিজিটাল ও প্রোগ্রামেবল রোবট আবিষ্কার করেন। অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে, রোবট শব্দটির প্রবক্তা কে রোবটকে আবিষ্কার করেছেন? 

Google News

তাদের প্রশ্নের উত্তর হবে–  রোবটের প্রবক্তা এবং আবিষ্কারক হলেন আমেরিকান উদ্ভাবক জর্জ চার্লস ডেবল। যিনি ১৯৫০ সালে প্রথম ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট তৈরি করেছিলেন। যার নাম ছিল ইউনিমেট। 

রোবটিক্স এর গুরুত্ব

টেকনোলজিক্যাল যুগে বর্তমানে সবকিছু খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল। তাই প্রযুক্তি দিনের পর দিন যেভাবে পরিবর্তন হচ্ছে এবং তার প্রসার ঘটাচ্ছে তাই এই সময়ে দাঁড়িয়ে রোবটিক্স এর গুরুত্ব অতুলনীয়। আপনি হয়তো জেনে থাকবেন মানুষের সঠিক প্রচেষ্টা এবং তাদের একাগ্রতা এই পরিবর্তনকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে স্কুলে বাচ্চাদের এখন থেকেই রোবট এক্স এর গুরুত্ব এবং শেখার উপকারিতা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা প্রদান করা হচ্ছে। যাতে করে শিশুরা বর্তমান বিষে নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে আগে থেকেই ধারণা অর্জন করতে পারে।

রোবটিক্স এর গুরুত্ব ও এর বিস্তৃতি প্রচুর। কেননা এটি মানুষের সৃজনশীলতা বিকাশের সাহায্য করে পাশাপাশি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ার এবং গণিত বিষয়গুলোকে মজাদার করে তোলে। যেকোনো সমস্যার সমাধানকারী হয়ে ওঠে রোবট অর্থাৎ রোবোটিক্স প্রক্রিয়া। এটি মূলত প্রযুক্তি নির্ভর ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতে সক্ষম পাশাপাশি ভবিষ্যৎ নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। 

রোবটিক্স এর ব্যবহার

রোবটিক্স এর ব্যবহার প্রচুর ক্ষেত্রে। সত্যি বলতে দৈনন্দিন জীবনে আমাদের যা যা করার প্রয়োজন পড়ে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে রোবোটিকস তার কার্যক্রম সম্পাদনের ক্ষমতা রাখে। রোবোটিক্স এর ব্যবহার নিম্নক্ত:

  1. ম্যানুফ্যাকচারিং
  2. বিপজ্জনক কাজে(যেমন: বোমা ডিফিউজড করতে)
  3. ভারী শিল্প কারখানায়
  4. পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পরীক্ষার কাজে
  5. মেইল ডেলিভারিরর কাজে
  6. ঝুঁকিপূর্ণ কাজে
  7. নিরাপত্তার কাজে
  8. পুলিশের সাহায্যকারী হিসেবে
  9. চিকিৎসায়
  10. সামরিক ক্ষেত্রে
  11. মহাকাশ গবেষণায়
  12. ঘরোয়া কাজে।

আরও দেখুনঃ নামের অর্থ

রোবটের উপাদান সমূহ কি কি?

একটি রোবটের সাধারণত হাতেগোনা কয়েকটি উপাদান অংশ থেকে থাকে। সেগুলো হলো:

  • মুভেবল বডি
  • একচুয়েটর
  • বৈদ্যুতিক উৎস
  • ইলেকট্রিক সার্কিট
  • কম্পিউটার অর্থাৎ পোগ্রামিক মস্তিষ্ক
  • অনুভূতি

রোবটিক্স এর বৈশিষ্ট্য সমূহ

বেশ কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে রোবোটিক্সের। যা এ পর্যায়ে আমরা তুলে ধরব। 

  • রোবট নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম দ্বারা সর্বদা নিয়ন্ত্রিত বিধায় যে কোন কাজ দ্রুত এবং নিখুঁতভাবে সম্পূর্ণ করতে সক্ষম।
  • এটি বিরতিহীন ও ক্লান্তিহীন ভাবে দিনরাত একটানা কাজ করে। কোন একঘেয়েমি বোধ আসে না রোবটের।
  • রোবটের যে কোন মানবিক অনুভূতি সৃষ্টি হয় না। 
  • রোবট সর্বদা অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তার মাঝে যে সিস্টেমগুলো পরিচালনা করার প্রোগ্রাম সাজানোর রয়েছে সে শুধুমাত্র সেই সব কাজ দ্রুত স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়।

রোবটিক্স এর ভবিষ্যৎ

ধারণা করা যায় ধীরে ধীরে রোবট মানুষের জায়গা নিতে সক্ষম হবে। এমন একটা সময় আসবে একজন মানুষ তার নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে যেভাবে কাজ করে একটি রোবট তার তুলনায় অনেক বেশি কাজ করতে সক্ষম হবে এবং মানুষের থেকে দ্বিগুণ ভালো কাজ করতে পারবে। রোবটিক্স এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল ও সুদূর প্রসারী। এর উন্নতি ও অগ্রগতির সাথে সাথে মানব জীবনের যে কোন কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে। সময় বাচবে, পরিশ্রমের পরিমাণ কমবে।


পরিশেষে: তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, এই ছিল রোবটিক্স কাকে বলে সম্পর্কিত আমাদের আজকের আর্টিকেল। কোন মন্তব্য থেকে থাকলে কমেন্ট করে জানান। নিয়মিত যে কোন পোষ্টের নোটিফিকেশন সবার আগে পেতে আমাদের সাথে থাকুন।

আরও দেখুনঃ